আমি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, পিতা মোঃ মোস্তফা, থানাঃ রামগঞ্জ, জেলাঃ লক্ষীপুর, অভিযুক্ত ব্যক্তি হাজী মোঃ আহসান উল্লাহ, পিতাঃ মরহুম হেদায়েতুল ইসলাম, সাং- জয়নাবাড়ি, হেমায়েতপুর, সাভার ঢাকা, আমি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন ও আমার বাবা দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলাম, একটা সময় আমি ও আমার বাবা দেশে চলে আসি, প্রবাসে থাকা উপার্জনের টাকা দিয়ে একটি ভালো ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেই।
সেই অনুযায়ী জয়নাবাড়ি, হেমায়েতপুর, মোঃ আহসান উল্লাহ ভাইয়ের কাছ থেকে ০১/০৭/২০২০ ইং তারিখে একটি ২৫০০ স্কয়ার ফুটের ঘর ২ লক্ষ টাকা এডভান্স দিয়ে ও ২৩ হাজার টাকা ভাড়া চুক্তির মাধ্যমে দুইজনের সম্মতিতে ভাড়া নিলাম। ঘরটি নেওয়ার পর আমি নিজের খরচে উল্লেখযোগ্য কিছু মেরামতের কাজ করাই যার খরচ আনুমানিক ৫ লক্ষ টাকা। সেখানে আইপ্রেস ফুড কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করি। ফ্যাক্টরির শুরুতে মেশিন ও বিভিন্ন স্টিকার কাটুন কেমিকেল যাবতীয় মালামাল বাবদ আমি ৩০ লক্ষ টাকা ইনভেস্ট করি। দীর্ঘ ছয় মাস পর আমি আরো একটি ফ্যাক্টরির কিছু কোমল পানীয় (ড্রিংস) এর মেশিন ১৮ লক্ষ টাকা মূল্যে ক্রয় করে আমার ফ্যাক্টরিতে নিয়ে আসি। তারপর আহসান ভাইয়ের সাথে বসে আলোচনা করি। মেশিনগুলো স্থাপন করার জন্য আমার আরেকটি ঘর প্রয়োজন ছিল যার ফলে আহসান ভাই আমাকে তাহার আরেকটি ঘর বিষয়ে অবগত করেন এবং আমি আমার পছন্দ হয় বলে শুধুমাত্র সম্মতি জানিয়েছি বিধায় তিনি আমাকে ১৬,০০০ টাকা ভাড়ার কথা বলেন। আমি এই বিষয়ে পরে জানাবো বলে তাকে জানাই। উল্লেখ্যে যে, পরবর্তীতে আমি শুধুমাত্র পছন্দ হয়েছে বলার কারণেই তিনি আমাকে উক্ত ঘরটির বিপরীতে কোন প্রকার চুক্তিপত্র বা কথা-বার্তা ছাড়াই ২ বছরের সম্পূর্ন ভাড়া জোর পূর্বক আদায় করে নেয় বরং আমি একদিনের জন্যও উক্ত ঘরটি ব্যবহার করতে পারিনি।
ফ্যাক্টরি চালু করার প্রায় ৬ মাস পর একদিন সকালে সাংবাদিক পরিচয়ে কিছু সন্ত্রাসী এসে আমাকে বিভিন্নভাবে অনেক লাঞ্ছিত করেন এবং আমাকে হুমকি-ধামকি দিয়ে আমার কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়। সেদিন বিকেলে আহসান ভাই আমাকে ফোন করে ইমার্জেন্সি দেখা করতে বলেন এবং আমি আহসান ভাইয়ের সাথে দেখা করি। তখন তিনি আমাকে বলেন তার এলাকার ছোট ভাই সমর চেয়ারম্যান আমাকে তার কাছে নিয়ে যেতে বলেছে এবং তিনি আমাকে সমর চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে যায়। সমর চেয়ারম্যান আমাকে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি ও গালাগালি করে এবং তার কিছু লোক আমাকে মারধোর করে এবং আমাকে বলে আমার চোখ উঠিয়ে নিবে হাতের নখ উঠিয়ে নিবে এবং সাংবাদিক পরিচয়ে যারা এসেছিল তাদেরকে টাকা পয়সা দিয়ে ভেজাল মিট করার জন্য। তখন আহসান ভাইকে আমি ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে সমাধান করি যার ফলে টাকা কম হওয়ার কারনে সমর চেয়ারম্যান আমার উপর আরো রাগ হন। তার দুই তিন দিন পর সকাল বেলা সমর চেয়ারম্যানের কিছু লোক দিয়ে উঠিয়ে নিয়ে যায় এবং অনেক মারধর করে বিভিন্নভাবে গালাগালি করে এবং ২০ লক্ষ টাকা দাবি করে ফলে আমি সমর চেয়ারম্যানের হাতে পায়ে ধরে সারাদিন আটকে রাখার পর সন্ধ্যার সময় ৫ লক্ষ টাকা দিলাম। তারপর সে আমাকে এই কথা কারো কাছে প্রকাশ
করলে আবারও আমাকে নিয়ে যাবে এই বলে হুমকি দেয়। আমি তখন মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলাম এবং ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দিয়েছিলাম।
তার কিছুদিন পর আহসান ভাই বলে সে আমার ফেসবুক আইডি পেয়েছে, আমি বিএনপির রাজনীতি করি এবং উনি আওয়ামিলীগের রাজনীতি করে সমর চেয়ারম্যান তার ছোট ভাই, উনি যা বলবে তাই হবে এবং এলাকায় ওনার উপরে কেউ কোন কথা বলতে পারেনা। এসব কথা শুনে আমি বুঝতে পারি সাথে সমর চেয়ারম্যান যা করেছে এসব বিষয় আহসান ভাই অবগত আছেন।
তখন আমি আরো বেশি চিন্তিত হয়ে যাই এত টাকা ইনভেস্ট করলাম কি করা যায়? পরবর্তীতে আহসান ভাইয়ের সাথে আরো গভীর সম্পর্ক করার চেষ্টা করি এবং আমার ফ্যামিলিগত পারিবারিক কিছু বিষয় আহসান ভাইয়ের সাথে শেয়ার করি তখন আহসান ভাই আমাকে সাময়িক কিছু বিষয়ে সহযোগিতা করে। আমি যখন ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দিলাম তখন ফ্যাক্টরির ভিতরে আমার ৩০০শ কাটুন চকলেট যার মূল্য ১২ লক্ষ টাকা আরো ৩ লক্ষ টাকার কেমিক্যাল ছিল এবং ফ্যাক্টরীর যাবতীয় মালামাল ছিল। তিন মাস পর এসে দেখলাম আহসান ভাই আমার ফ্যাক্টরির তালার ঝালাই করে দিয়েছেন যা দেখে আমি খুব কষ্ট পাই। আমি যখন আহসান ভাইকে এই বিষয়ে বললাম তিনি আমাকে আর এখানে ফ্যাক্টরি চালু করতে দিবে না এই বলে আবারও হুমকি দেয়। তখন আমি সাভার থানায় মামলা করার জন্য যাই, কিন্তু থানা থেকে আমাকে বলে দেয় তাদের নামে কোন মামলা করা যাবে না। নিরুপায় হয়ে চলে আসি।
পরবর্তীতে আহসান ভাই আমাকে দুই বছর ফ্যাক্টরির কাছে আসতে দেননি। দুই বছর পর এসে দেখলাম ফ্যাক্টরির ভিতরে থাকা মেশিন সহ যাবতীয় সব মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। অবশেষে আমি ভাড়ার টাকা পরিশোধ করার জন্য পুনরায় মেশিন সার্ভিসিং করি এবং নষ্ট হওয়া মালামাল নদীতে ফেলে দিই। আহসান ভাই ঘর ভাড়ার টাকার জন্য আমাকে তখন বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে ফলে আমি কিছু মেশিন বিক্রি করে দিয়ে তাকে টাকা পরিশোধ করবো বললে তিনি আমাকে তালা খুলে দেন। আহসান ভাই আমাকে দুই বছর ফ্যাক্টরীর সামনে আসতে দেয়নি সত্ত্বেও দুই বছরের ভাড়ার টাকা তাকে পরিশোধ করতে হয়েছে। আরো ৪টি মেশিন ফ্যাক্টরিতে থাকে কিছু দিন আগেও ভাড়ার টাকার জন্য আহসান ভাই আমাকে চাপ সৃষ্টি করে তখন আমি একটি মেশিন বিক্রি করে আহসান ভাইকে টাকা দিব বলি। কিন্তু মেশিনটি বিক্রি করতে হলে আবারও সার্ভিসিং করতে হবে। আমার কাছে এত টাকা না থাকার কারণে আহসান ভাইকে বললাম, তখন আহসান ভাই আমাকে টাকা দিতে ইচ্ছুক হয়েছে যদি আমি আহসান ভাইকে লিখিত দেই এই মর্মে যে, মেশিন সার্ভিসিং করার পর দুইজনের সম্মতিতে মেশিন বিক্রি করব। আমি লিখিত দিলাম কিন্তু মেশিন সার্ভিসিং করার পর উনি আমাকে না জানিয়েই আমার মেশিনটি বিক্রি করে ফেলেন। এখনো আমার বেশ কিছু মালামাল ফ্যাক্টরিতে আছে যা আহসান ভাই আমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছেন না। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা কারণে আহসান ভাই আমার প্রায় ১ কোটি টাকা পরিমাণ অর্থ ক্ষতি করেন। আমি সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। বর্তমানে আমি আমার জীবনের সকল সঞ্চয় হারিয়ে খুবই মানবেতর জীবন-যাবন করছি। বিভিন্ন মানুষের নিকট থেকে ধার-দেনা করে সংসার চালাচ্ছি।
তাই আমি আমার সাথে প্রতারণা ও আমার প্রায় ১ কোটি টাকা পরিমাণ অর্থ ক্ষতি করার কারণে এবং সামাজিক ভাবে সমাজের কাছে আমাকে লাঞ্ছিত করার কারণে আহসান ভাই ও সমর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা এবং আমার ক্ষতিগ্রস্থ্য টাকা ফেরত পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য আকুল আবেদন করছি।